মাইগ্রেন বা মাথাব্যথার কারণ ও চিকিৎসা Migraine - It's Causes & Treatment in Bengali

মাইগ্রেন(Migraine) হল একপ্রকার মাথাব্যথা(Headche) যা মূলত আমাদের কপালে বেশি হতে দেখা যায়। Migraine কে বাংলায় আধকপালে বলা হয় কারণ ইহা আমাদের কপালের অর্ধেক জুড়ে হতে দেখা যায়। তবে একে আধ কপালে বললেও ইহা কখন কখন পুরো কপাল জুড়ে বা আধ কপালে হয়ে পরে ধীরে ধীরে  পুরো কপাল জুড়ে বিস্তার লাভ করে।



মাইগ্রেন সমস্যা ছোট থেকে শুরু করে বড় সবার হতে দেখা যায়। তবে ছেলেদের থেকে মেয়েদের ইহা বেশি হতে দেখা যায়।

মাইগ্রেন 4 ঘন্টা থেকে শুরু করে 72 ঘন্টা পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। ইহা খুবই বিরক্তিকর একটা অবস্থা। আমরা খুব কম জনেই এর চিকিৎসা করে থাকি। আসলে এর কোন স্থায়ী চিকিৎসা নেই। তবে মাইগ্রেন বেশিদিন পর্যন্ত স্থায়ী হলে তা চিন্তার কারণ হতে পারে। সত্যি বলতে মাইগ্রেনের তেমন একটা কুপ্রভাব দেখা যায় না। তবে মাইগ্রেন বেশিক্ষণ স্থায়ী হলে চিন্তার কারণ হতে পারে।


মাইগ্রেনের কারণ (Causes of Migraine):


মাইগ্রেন বিভিন্ন কারণে হতে পারে। নীচে কিছু কারণ আলোচনা করা হল।

* মাইগ্রেনের একটা বড় কারণ হল ফ্যামিলি ফ্যাক্টর। অর্থাৎ কোন পরিবারে বাবা-মা এর এই সমস্যা থাকলে তাঁর ছেলে-মেয়েদের ও মাইগ্রেন হতে বেশি দেখা যায়।

* সর্দি বা ঠান্ডা লাগলে মাইগ্রেন হতে পারে।

* অনেক সময় পেটে অম্বলের পরিমাণ বেশি হলে মাইগ্রেন দেখা দেয়।

* মানসিক চিন্তা(Mental stress), দুঃখ ইত্যাদি কারণেও মাইগ্রেন হতে পারে।

* মেয়েদের মাসিকের গন্ডগোল দেখা দিলে মাইগ্রেন হতে পারে।

* রাতে ঠিকমতো ঘুম না হলে মাইগ্রেন হতে পারে।

মাইগ্রেন হলে কি করবেন? (How to get ride from Migraine?):


জলপান করা (Drink water):

আমাদের দেহে অনেক সময় ডিহাইড্রেশন(Dehydration) অর্থাৎ জলের অভাব ঘটলে মাইগ্রেন বা headche শুরু হয়। মাইগ্রেন শুরু হলে বড় গ্লাসের এক গ্লাস জল খান। মাইগ্রেন কমে যাবে।

স্বাস - প্রশ্বাসের ব্যায়াম করুন (Breathing exercise):

স্বাস প্রশ্বাসের ব্যায়াম এবং মানসিক চিন্তা দূর করলে মাইগ্রেন সমস্যা দূর হয়।
এক নাক দিয়ে স্বাস নিয়ে অন্য নাক দিয়ে স্বাস বের করে দিন। এইভাবে দ্রুত বা আস্তে করুন আপনার যেরকম সহ্য হবে।

আর মানসিক চিন্তা দূর করার জন্য যেকোনো একটা কাজে নিজেকে ব্যাস্ত রাখুন। সময়মত খাওয়া দাওয়া করুন। ঠিকমতো ঘুমোতে যান।

বডি ম্যাসাজ (Body massage):

নিয়মিত বডি ম্যাসাজের ফলে আমাদের শরীরে রক্ত চলাচল বৃদ্ধি পায়। যার ফলে মাইগ্রেন দূর হয়।
বডি ম্যাসাজের জন্য আপনারা কোন professional physiotheraphist এর সাহায্য নিন।

যোগা করুন (Yoga):

যোগা আমাদের দেহের muscle কে relax করে, দেহে রক্ত চলাচল বৃদ্ধি করে এবং মানসিক চিন্তা দূর করে যার ফলস্বরূপ মাইগ্রেন দূর হয়।

যোগা করার জন্য কোন যোগ গুরুর সাহায্য নিন। অথবা কোন যোগার বই কিনে বাড়িতে ধীরে ধীরে practice করুন। দেখুন অনেক উপকার পাবেন।

আদা (Ginger):

একটা গবেষণায় দেখা গেছে যে, যেসব মানুষরা নিয়মিত মাইগ্রেন সমস্যায় ভুগে থাকেন তাদের ক্ষেত্রে আদা খুব উপকারী।

মাইগ্রেন দেখা দিলে একটুকরো আদা কুচি চিবিয়ে খেয়ে জল পান করলে মাইগ্রেন দূর হয়। এছাড়া আদার পাউডার নিয়মিত সেবন করলে মাইগ্রেন সমস্যা আসে না।

খালি পেটে থাকলে (In empty stomach):

দীর্ঘক্ষণ খালি পেটে থাকলে মাথা ঘোরা, বমিভাব বা মাইগ্রেন শুরু হয়। তাই চেষ্টা করবেন বেশিক্ষণ খালি পেটে না থাকতে।

খাবার সময় না পেলে কাছে কিছু হালকা খাবার রেখে দিন। সেই গুলি খেয়ে একগ্লাস জল খান।

চা বা কফি পান করা (Drink tea or coffee):

মাইগ্রেন শুরু হলে তা দূর করার একটা সহজ উপায় হল গরম চা বা কফি পান করা।

কফিতে আছে ক্যাফেইন(Caffein) যা আমাদের রক্তবাহের প্রসারণ ঘটিয়ে রক্তচলাচল বৃদ্ধি করে। যার ফলে মাইগ্রেন বা মাথাব্যথা দূর হয়।

এককাপ কফির সঙ্গে দুফোঁটা লেবুর রস মিশিয়ে পান করলে আরও ভালো উপকার পাওয়া যায়।

কামোমিল (Chamomile):

কামোমিলে আছে প্রাকৃতিক soothing এলিমেন্ট যা মাইগ্রেনর জন্য উপকারী।

মাইগ্রেন শুরু হলে chamomile tea পান করুন। দারুন উপকার পাবেন।

আপেল (Apple):

আপনি কি জানেন আপেল নিয়মিত খেলে মাইগ্রেন দূরে থাকে। একটা গবেষণায় দেখা গেছে green apple এর গন্ধ নাকে গেলে মাইগ্রেন দূর হয়। তাই যাদের মাইগ্রেন সমস্যা আছে তাদের ভালো হয় যদি তারা গ্রিন আপেল নিয়মিত খান।

আঙুর রস (Grapes juice):

আঙুর বিশেষ করে কালো আঙুর কিনে এনে juice তৈরি করে ফেলুন। তারপর সেই juice খান। দেখবেন মাইগ্রেন সমস্যা দূর হয়ে যাবে।

তুলসী (Basil):

আপনি কি জানেন টাটকা তুলসী পাতা রোগড়িয়ে সেই ঘ্রাণ নাকে দিলে তৎক্ষণাৎ মাইগ্রেন দূর হয়।

একটি বাটিতে কিছু পরিমাণ সরষের তেল এবং কয়েকটি তুলসীর পাতা নিয়ে ফুটিয়ে নিন। সেই তেল ঠান্ডা করে কাঁচের বোতলে রেখে দিন।
এই তুলসীর তেল দিয়ে কপালে হালকা ম্যাসাজ করলে মাইগ্রেন দূর হয়। নিয়মিত এই ম্যাসাজ করলে মাইগ্রেন আর ফিরে আসে না।