এমিকাসিনের ব্যবহার, মাত্রা এবং পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া Amikacin - Its uses, dose & side effects


এমিকাসিন (Amikacin)


এমিকাসিন (Amikacin)  এমাইনোগ্লাইকোসাইড গ্রূপের একটি এন্টিবায়োটিক ওষুধ। এটি ক্যানামাইসিন থেকে সেমিসিন্থেটিক ভাবে তৈরি করা হয়। এটি অনেক গ্রাম পজিটিভ এবং গ্রাম নেগেটিভ জীবাণুদের ওপর সক্রিয়। এর ক্রিয়াপদ্ধতি অন্যান্য এমাইনোগ্লাইকোসাইডের মতই।




ক্রিয়াপদ্ধতি (Action method):

এটি মুখে খেলে শোষিত হয় না বলে ইনজেকশন মাধ্যমে ব্যবহার করা হয়।
এটি ইনজেকশন মাধ্যমে পেশিতে (IM)  দেবার 1 ঘন্টার মধ্যে রক্তরসে সর্বোচ্চ মাত্রায় পৌঁছায়। শিরাপথে (IV) দেবার 1 মিনিটের মধ্যে রক্তরসে সর্বোচ্চ মাত্রায় পৌঁছায়। এটি রক্তরসে 8 - 12 ঘন্টা পর্যন্ত সক্রিয়(Active) থাকে। এই ওষুধের অধিকাংশই মূত্রের মাধ্যমে বাইরে নির্গত হয়। শিরাপথে(IV) দিলে এর ক্রিয়া দ্রুত হয়। এটি দেহের সমস্ত কলা কোষে সমানভাবে ছড়িয়ে পড়ে, এমনকি CSF (Cerebro Spinal Fluid), পেরিটনিয়াল ফ্লুইড ইত্যাদিতে ব্যাপকভাবে বিস্তার লাভ করে।


ব্যবহার (Uses):

মূত্রযন্ত্রের (UTI) সকল প্রকার ইনফেকশন, হাড় ও জয়েন্টের ইনফেকশন, পোড়া ঘা, ব্রঙ্কাইটিস, নিউমোনিয়া, ফুসফুসের সকল প্রকার রোগ, কলেরা, ডায়রিয়া সহ সকল প্রকার আন্ত্রিক রোগ, রক্তদুষ্টি, ত্বকের সকল প্রকার ইনফেকশন, মেনিনজাইটিস, পেরিটনাইটিস প্রভৃতিতে এমিকাসিন ব্যবহার করা হয়।


মাত্রা (Dose):

প্রাপ্তবয়স্কদের (Adult) 500 mg করে দিনে 2 বার পেশিতে অথবা শিরাপথে দেওয়া যায়। শিরাপথে (IV) এটি খুব ধীরে ধীরে পুশ করতে হয়। I.V ফ্লুইডের সাথেও 30 মিনিট ব্যাপী এটি পুশ করা যায়।

শিশুদের জন্ম থেকে 1 সপ্তাহ বয়স পর্যন্ত প্রথমে 100 mg ভায়ালের 1/2 ml, পরে 12 ঘন্টা অন্তর 1/3 ml করে দেওয়া যায়।

1 সপ্তাহ থেকে 6 মাস বয়স পর্যন্ত শিশুদের 1/2 ml করে দিনে 2 - 3 বার দেওয়া যায়।

6 মাস থেকে 2 বছর বয়স পর্যন্ত শিশুদের 100 mg ভায়াল 2 ml করে দিনে 2 বার দেওয়া যাবে।

2 বছর থেকে 4 বছর বয়স পর্যন্ত শিশুদের 250 mg ভায়াল এক থেকে দেড় ml করে দিনে 2 বার দিতে হবে।

4 বছর থেকে 12 বছর বয়স পর্যন্ত 250 mg ভায়াল 2 ml করে দিনে 2 বার দেওয়া যাবে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে পেশিতে (IM) পুশ করাই ভালো।


পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া (Side effects):

মাথাধরা, হালকা জ্বর, চামড়ায় উদ্ভেদ, সন্ধির প্রদাহ (Joint pain) প্রভৃতি হতে পারে। মূত্রে কাস্ট, সেল প্রোটিন প্রভৃতি নির্গত হয়। এছাড়া ঝিমুনিভাব, হাত পা কাঁপা, মাথাঘোরা, কান ভোঁ ভোঁ করা, কানে কম শোনা প্রভৃতি দেখা দিতে পারে। অবসাদ, অনিদ্রা, ক্ষুধামন্দা, বমিভাব, চুল ওঠা প্রভৃতিও কখনও হতে দেখা যায়।


সাবধানতা (Caution):

এমাইনোগ্লাইকোসাইডে এলার্জি থাকলে এটি ব্যবহার করা চলবে না। গর্ভবতী মহিলাদের জরুরি প্রয়োজনে কম মাত্রায় ব্যবহার করতে হবে। স্তনদানকারী মায়েদের ব্যবহার না করাই ভাল। এই ওষুধ অন্য কোন ওষুধের সাথে মিশিয়ে পুশ করা যাবে না।


আন্তঃবিক্রিয়া (Intereaction):

এমপিসিলিন, সালফাডায়াজিন, ফ্রুসেমাইড, বুমেটাডিন, সিসপ্লাটিন, ভ্যানকমাইসিন, পেনিসিলিন, সেফালোস্পরিন, এরিথ্রোমাইসিন, হেপারিন ইত্যাদির সাথে আন্তঃবিক্রিয়া ঘটে, ফলে বিভিন্ন সাইড এফেক্ট দেখা দিতে পারে।

জেন্টামাইসিনের ব্যবহার, মাত্রা এবং পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া Gentamicin - Its uses, dose & side effects

জেন্টামাইসিন (Gentamicin)


জেন্টামাইসিন (Gentamicin) জলে দ্রবণীয় সাদা রঙের পাউডার। এটি এক বিশেষ ধরনের ছত্রাক কালচার করে তৈরি করা হয়। এর সালফেট রূপ ওষুধ হিসেবে ব্যবহার হয়। এটি একটি শক্তিশালী এমাইনোগ্লাইকোসাইড এন্টিবায়োটিক। জেন্টামাইসিন অধিকাংশ গ্রাম নেগেটিভ জীবাণুদের বিরুদ্ধে দারুণভাবে সক্রিয়।



ক্রিয়াপদ্ধতি (Action method):

এটি পৌষ্টিকতন্ত্র থেকে শোষিত হয় না বলে ইনজেকশন মাধ্যমে ব্যবহার করা হয়। তবে এটি বাহ্যিক প্রয়োগের মলম বা ক্রিম এবং চোখ ও কানের ড্রপ হিসেবে পাওয়া যায়।

এটি ইনজেকশন মাধ্যমে পেশিতে দেবার 1 ঘন্টার মধ্যে রক্তরসে সর্বোচ্চ মাত্রায় পৌঁছায়। এটি রক্তরসে 8 - 12 ঘন্টা পর্যন্ত সক্রিয়(Active) থাকে। এই ওষুধের অধিকাংশই মূত্রের মাধ্যমে বাইরে নির্গত হয়। শিরাপথে(IV) দিলে এর ক্রিয়া দ্রুত হয়। এটি দেহের সমস্ত কলা কোষে সমানভাবে ছড়িয়ে পড়ে, তবে CSF (Cerebro Spinal Fluid) এ খুব কম মাত্রায় পৌঁছায়।


ব্যবহার (Uses):

মূত্রযন্ত্রের (UTI) সকল প্রকার ইনফেকশন, পোড়া ঘা, ব্রঙ্কাইটিস, নিউমোনিয়া, ফুসফুসের সকল প্রকার রোগ, কলেরা, ডায়রিয়া সহ সকল প্রকার আন্ত্রিক রোগ, রক্তদুষ্টি, ত্বকের সকল প্রকার ইনফেকশন, নাক ও কানের সকল প্রকার ইনফেকশন প্রভৃতিতে জেন্টামাইসিন ব্যবহার করা হয়।

এই ওষুধ সদ্যোজাত শিশুদের ক্ষেত্রেও ব্যবহার করা। মলম বা ক্রিম আঘাত ও ক্ষতের ড্রেসিং, সার্জারীর পর বাহ্যিক প্রয়োগ করতে, ফোঁড়া, কার্বান্কল, পিতবর্ণ পীড়া ও অন্যান্য ক্ষতে বাহ্যিক প্রয়োগ করতে ব্যবহার করা চলে।

ড্রপ ওষুধ কানে পুঁজ, চোখের যন্ত্রণা, কর্নিয়ার ক্ষত, কানের অন্যান্য ইনফেকশনে ব্যবহার করা হয়।


মাত্রা (Dose):

প্রাপ্তবয়স্কদের (Adult) 80 mg অর্থাৎ 2 ml করে দিনে 2 - 3 বার ইন্টরামাসকুলার (IM) পথে দেওয়া হয়। মারাত্মক ইনফেকশনে ইন্ট্রাভেনাস (IV) পথেও দেওয়া যায়।

শিশুদের জন্মের পর থেকে এক সপ্তাহ বয়সকালে 7.5 mg দিনে 2 বার দেওয়া হয়। 1 সপ্তাহ থেকে 6 মাস পর্যন্ত 10 mg দিনে 2 বার দেওয়া যায়। 6 মাস থেকে 4 বছর বয়স পর্যন্ত 15 - 20 mg দিনে 2 বার দেওয়া যাবে। 4 বছর থেকে 12 বছর বয়স পর্যন্ত শিশুদের 60 mg দিনে 2 বার দিতে হবে।

মলম বা ক্রিম প্রয়োজন অনুযায়ী ব্যবহার করতে হবে। চোখ বা কানের ড্রপ যথাক্রমে 1 - 2 ফোঁটা এবং 3 - 4 ফোঁটা করে দিনে 3 - 4 বার দেওয়া হয়।


পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া (Side effect):

মাথাধরা, চামড়ায় উদ্ভেদ, সন্ধির প্রদাহ (Joint pain) প্রভৃতি হতে পারে। মূত্রে কাস্ট, সেল প্রোটিন প্রভৃতি নির্গত হয়। এছাড়া ঝিমুনিভাব, মাথাঘোরা, কান ভোঁ ভোঁ করা প্রভৃতি দেখা দিতে পারে। অবসাদ, অনিদ্রা, ক্ষুধামন্দা, বমিভাব, চুল ওঠা প্রভৃতিও কখনও হতে দেখা যায়।


আন্তঃবিক্রিয়া (Intereaction):

ফ্রুসেমাইড, বুমেটাডিন, সিসপ্লাটিন, ভ্যানকমাইসিন, পেনিসিলিন, সেফালোস্পরিন, এরিথ্রোমাইসিন, হেপারিন ইত্যাদির সাথে আন্তঃবিক্রিয়া ঘটে, ফলে বিভিন্ন সাইড এফেক্ট দেখা দিতে পারে।


সাবধানতা (Caution):

গর্ভাবস্থায় এই ওষুধ ব্যবহার নিষেধ, স্তনদানকারী মায়েদের ব্যবহার না করাই ভাল। বয়স্কদের (Adult) ব্যবহারে কোন বাধা নেই। শিশুদের প্রস্রাবের রোগ থাকলে সাবধানে ব্যবহার করতে হবে। স্নায়ুতন্ত্রের (Nervous system) বিভিন্ন রোগে এটি ব্যবহার না করাই ভাল।

ক্লক্সাসিলিনের ব্যবহার, মাত্রা এবং পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া Cloxacillin - Its uses, dose & side effects


    ক্লক্সাসিলিন (Cloxacillin)


ক্লক্সাসিলিন (Cloxacillin) পেনিসিলিয়ামের সেমি-সিনথেটিক প্রোডাক্ট। এটি জলে আংশিক দ্রবণীয়, হালকা মিষ্টি গন্ধযুক্ত, সাদা রঙের মিহিদানাযুক্ত পাউডার। এটি একটি ব্রড স্পেকট্রাম ব্যাকটেরিয়া ধ্বংসকারী ওষুধ। এই ওষুধ সকল প্রকার গ্রাম পজিটিভ ব্যাকটেরিয়ার উপর সক্রিয়। এর ক্রিয়াপদ্ধতি পেনিসিলিনের মতই। এর একটি সুবিধা হল এটি PBP দ্বারা নষ্ট হয় না। তাই যেসব ব্যাকটেরিয়া পেনিসিলেজ সৃষ্টিকারী তারা এদের ক্রিয়া ব্যাহত করতে পারে না। এজন্য ক্লক্সাসিলিনকে পেনিসিলেজ রেজিস্টেন্ট পেনিসিলিন বলা হয়।



ক্রিয়াপদ্ধতি (Action method):

এটি খাবার খাওয়ার 1 ঘন্টা আগে বা 2 ঘন্ট পর খেলে ভালোভাবে শোষিত হয়। এটি খাবার 1 ঘন্টা পর রক্তে সর্বোচ্চ মাত্রায় পৌঁছায় এবং 4 ঘন্টা সক্রিয় থাকে। ইন্ট্রামাসকুলার(IM) পথে ইনজেকশন দিলে আধ ঘন্টার মধ্যে রক্তরসে সর্বোচ্চ মাত্রায় উপস্থিত হয়। এই ওষুধের 35% মূত্রের মাধ্যমে এবং 10% পিত্তরসের মাধ্যমে নির্গত হয়। এই ওষুধ দেহের সব কলা ও কোষে ছড়িয়ে পড়ে।


ব্যবহার (Uses):

শ্বাসযন্ত্রের সকল প্রকার রোগ (RTI), নাক, কান ও গলার নানা রোগ, হাড় ও সন্ধির রোগ, চর্মরোগ ও ক্ষত, মূত্রযন্ত্রের রোগ (UTI), নার্ভের সমস্যা, বিভিন্ন প্রকার স্ত্রীরোগ, স্তনের ইনফেকশন, জ্বালা পোড়া, সদ্যোজাত শিশুর বিভিন্ন প্রকার ইনফেকশন প্রভৃতিতে এই ওষুধ ভালো কাজ করে।


মাত্রা (Dose):

প্রাপ্তবয়স্কদের 250 - 500 mg দিনে 3 - 4 বার মুখে খেতে দেওয়া হয়।

শিশুদের জন্ম থেকে 1 বছর বয়স পর্যন্ত 62.5 mg দিনে 4 বার, 1 বছর থেকে 5 বছর পর্যন্ত 125 mg দিনে 4 বার। 5 বছর থেকে 12 বছর পর্যন্ত 250 mg দিনে 4 বার দেওয়া যায়।

প্রাপ্তবয়স্কদের ইনজেকশন 250 mg - 500 mg দিনে 3 - 4 বার Intramuscular (IM) বা Intravenus (IV) পথে দেওয়া যায়।

ছোট শিশুদের এই ইনজেকশন 100 mg/kg দেহের ওজন হিসেবে সারাদিনে 3 - 4 বার ভাগ করে দিতে হবে।


পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া (Side effect):

পেনিসিলিয়ামে এলার্জি থাকলে চামড়ায় উদ্ভেদ নির্গমন, আমবাত, চুলকানি, বুক ধড়ফড় করা, খিঁচুনি প্রভৃতি হতে পারে। এছাড়া সাধারণত পাতলা পায়খানা, কোষ্টকাঠিন্য, গা বমিভাব, রক্তাল্পতা, ইউসিনোফিলিয়া, লিউকোপেনিয়া, নিউট্রপেনিয়া প্রভৃতি উপসর্গ দেখা দিতে পারে। মারাত্মক প্রক্রিয় খুব কমই হয়।


সাবধানতা (Caution):

পেনিসিলিয়ামে এলার্জি থাকলে ব্যবহার করা চলবে না। হাঁপানি (Asthma), প্রবল জ্বর ইত্যাদিতে ব্যবহার না করাই ভাল। শিশুদের জন্ডিস এবং লিভারের অন্যান্য রোগ থাকলে ব্যবহার না করাই ভাল। গর্ভবতী মহিলা এবং স্তনদানকারী মায়েদের উচ্চমাত্রায় ব্যবহার করা ঠিক না।


আন্তঃবিক্রিয়া (Intereaction):

ক্লোরামফেনিকল, এরিথ্রোমাইসিন, এলপুরিনল, টেট্রাসাইক্লিন প্রভৃতি ওষুধের সাথে ব্যবহার করলে আন্তঃবিক্রিয়া ঘটে এবং কর্মক্ষমতা হ্রাস পায়।

গর্ভনিরোধক পিলের সাথে খেলে এর কর্মক্ষমতা কমে যায়, মাসিক ঋতুস্রাব বেশি হয়, গর্ভসঞ্চার ঘটতে পারে অর্থাৎ গর্ভরোধের কাজ ব্যর্থ হয়।

এমক্সিসিলিনের ব্যবহার, মাত্রা এবং পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া Amoxycillin - Its uses, dose & side effects


এমক্সিসিলিন (Amoxycillin)


এমক্সিসিলিন (Amoxycillin) পেনিসিলিয়ামের সেমি-সিনথেটিক প্রোডাক্ট। এটি জলে আংশিক দ্রবণীয়, হালকা মিষ্টি গন্ধযুক্ত, সাদা রঙের মিহিদানাযুক্ত পাউডার। এটি একটি ব্রড স্পেকট্রাম ব্যাকটেরিয়া ধ্বংসকারী ওষুধ। এই ওষুধ এমপিসিলিনের চেয়ে বেশি মাত্রায় শোষিত হয়। পাকস্থলীর এসিড এর শোষণে বাধা দিতে পারে না। এটি পেট ভর্তি বা খালি যেকোন অবস্থাতেই খাওয়া যায়। এটি মুখে খেলে বা ইনজেকশনের মাধ্যমে দিলে সর্বোচ্চ মাত্রায় রক্তে পৌঁছায়। এটি এমপিসিলিনের চেয়ে বেশি সক্রিয় এবং কার্যকরী (প্রায় 2 থেকে 3 গুন বেশি)।




ক্রিয়াপদ্ধতি (Action method):

এই ওষুধ মুখে খেলে 90% এর বেশি শোষিত হয় এবং 1 ঘন্টার মধ্যে সর্বোচ্চ মাত্রায় রক্তরসে পৌঁছায়। ইহা রক্তরসে 8 ঘন্টারও বেশি সময় থেকে মূত্রের মাধ্যমে দেহের বাইরে নির্গত হয়। এই ওষুধ শরীরের সমস্ত কলাকোষে এবং দেহরসে সমানভাবে পৌঁছায়। এই ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া খুব কম হতে দেখা যায়।


ব্যবহার (Uses):

ফ্যারিংজাইটিস, ল্যারিংজাইটিস, টনসিলাইটিস, ব্রঙ্কাইটিস, নিউমোনিয়া, নাক ও কানের বিভিন্ন সংক্রমণ, টাইফয়েড, প্যারাটাইফয়েড, মেনিনজাইটিস, প্রস্রাবের রোগ, সিফিলিস, গনোরিয়া, রক্ত দুষ্টি প্রভৃতিতে ব্যবহার করা হয়।


মাত্রা (Dose):

প্রাপ্তবয়স্কদের 250 - 500 mg দিনে 4 বার 7 - 10 দিন পর্যন্ত দেওয়া যায়।

সদ্যোজাত শিশুদের ড্রপ ওষুধ 5 - 10 ফোঁটা করে দিনে 3 - 4 বার দেওয়া হয়। 1 মাস থেকে 6 মাস বয়স পর্যন্ত শিশুদের ড্রাই সিরাপ তৈরি করে আধ চামচ বা কিডট্যাব আধখানা করে দিনে 4 বার দিতে হয়। 6 মাস থেকে 4 বছর পর্যন্ত শিশুদের 125 mg দিনে 4 বার অর্থাৎ 1 চামচ ড্রাই সিরাপ বা 125 mg কিডট্যাব দিনে 4 বার দেওয়া যায়। 4 বছর থেকে 12 বছর পর্যন্ত শিশুদের 250 mg ক্যাপসুল বা কিডট্যাব দিনে 3 - 4 বার দিতে হয়।

বয়স্কদের গনোরিয়াতে 3 gm অর্থাৎ 500 mg ক্যাপসুল একত্রে 6 টি 1 বার 1 দিন খাওয়ানো হয়।

ইনজেকশন ছোট শিশুদের 100 mg থেকে 125 mg দিনে 2 - 3 বার, 4 বছরের উর্দ্ধে শিশুদের 250 mg দিনে 2 - 3 বার দেওয়া যায়। শিশুদের IM পথে দেওয়াই ভালো।


পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া (Side effect):

পেনিসিলিয়ামে এলার্জি থাকলে চামড়ায় উদ্ভেদ নির্গমন, আমবাত, চুলকানি, বুক ধড়ফড় করা, খিঁচুনি প্রভৃতি হতে পারে। এছাড়া সাধারণত পাতলা পায়খানা, কোষ্টকাঠিন্য, গা বমিভাব, রক্তাল্পতা, ইউসিনোফিলিয়া, লিউকোপেনিয়া প্রভৃতি উপসর্গ দেখা দিতে পারে।


সাবধানতা (Caution):

গর্ভবতী মা ও স্তনদানকারী মায়েদের অল্প মাত্রায় দিতে হবে। পাতলা পায়খানার রোগীদের মুখে না খাইয়ে ইনজেকশন দিলে ভালো হয়। যাদের পেনিসিলিনে এলার্জি আছে তাদের এটা ব্যবহার নিষিদ্ধ।


আন্তঃবিক্রিয়া (Intereaction):

গর্ভনিরোধক পিলের সাথে খেলে এর কর্মক্ষমতা কমে যায়, মাসিক ঋতুস্রাব বেশি হয়, গর্ভসঞ্চার ঘটতে পারে অর্থাৎ গর্ভরোধের কাজ ব্যর্থ হয়।

এলপুরিনল এর সাথে খেলে চামড়ায় উদ্ভেদ বের হতে পারে। Atenolol এর সাথে খেলে তার কাজ কম হয়। এরিথ্রোমাইসিন ও টেট্রাসাইক্লিন এর সাথে খেলে কর্মক্ষমতা কম হয়।

এমপিসিলিনের ব্যবহার, মাত্রা এবং পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া Ampicillin - Its Uses, Dose & Side effects

এমপিসিলিন (Ampicillin)



এমপিসিলিন (Ampicillin) একটি ব্রড স্পেকট্রাম এন্টিবায়োটিক (Broad spectrum antibiotics). এটি পাকস্থলীর রসে নষ্ট হয় না। তাই এটি মুখে খাবার এবং ইনজেকশন দেওয়া এই দুই রকমভাবেই ব্যবহার করা হয়। এমপিসিলিন এনহাইড্রাস ও এমপিসিলিন ট্রাইহাইড্রেট একটা পাওয়া যায় যা মুখে খাবার উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হয়। এমপিসিলিন সোডিয়াম আকারে পাওয়া যায় যা ইনজেকশন হিসেবে ব্যবহৃত হয়।


এমপিসিলিন এনহাইড্রাস জলে দ্রবণীয়, তেতো স্বাদের হালকা গন্ধ যুক্ত, সাদা এবং খুব মিহিদানাযুক্ত পাউডার। এমপিসিলিন ট্রাইহাইড্রেট জলে দ্রবণীয়, সাদা, তেতো স্বাদযুক্ত, হালকা গন্ধযুক্ত পাউডার। এমপিসিলিন সোডিয়াম জলে দ্রবণীয় গন্ধহীন সাদা পাউডার। এমপিসিলিনের ক্রিয়াপদ্ধতি পেনিসিলিনের মত। তবে ইহা অনেক জীবাণুদের উপর সক্রিয়।





ক্রিয়াপদ্ধতি (Action method):

এটি মুখে খেলে ভালো শোষিত হয়। খাবার 30 মিনিটের মধ্যে ইহা রক্তে সর্বোচ্চ মাত্রায় পৌঁছায়। ইনজেকশন দিলে 1 মিনিটের মধ্যে রক্তে পৌঁছায়। এটির ক্রিয়া 4 - 6 ঘন্টা স্থায়ী হয়। এই ওষুধ খাবার খাওয়ার 2 ঘন্টা আগে বা 2 ঘন্টা পর খেলে 60 - 70% পাকস্থলী থেকেই শোষিত হয়।

এমপিসিলিন শরীরের সমস্ত কলাকোষে সমানভাবে ছড়িয়ে পড়ে। এমপিসিলিন মুখের ওষুধের 30% এবং ইনজেকশন ওষুধের 75% - 80% মূত্রের মাধ্যমে দেহের বাইরে নির্গত হয়। ইহা গর্ভফুল ভেদ করে প্রবেশ করে এবং স্তনদুগ্ধ এর সাথে নির্গত হয়। ইহা গর্ভের ভ্রূণ বা স্তনপানকারী শিশুর কোন ক্ষতি করে না।


ব্যবহার (Uses):

ব্রঙ্কাইটিস, নিউমোনিয়া সহ সকল প্রকার শ্বাসযন্ত্রের রোগ, নাক, কান ও গলার রোগ প্রভৃতিতে ইহা ব্যবহার করা হয়।

উদরাময়, রক্তামাশয় প্রভূতিতে এর ইনজেকশন ওষুধ ভালো ফল দেয়। এছাড়া টাইফয়েড, প্যারাটাইফয়েড, রক্তদুষ্টি, মেনিনজাইটিস ইত্যাদিতে এর ওরাল ও ইনজেক্টেবল ফর্ম ভালো কাজ করে।

গর্ভবতী মহিলাদের প্রস্রাবের রোগ, গনোরিয়া সহ আরও অন্যান্য সংক্রমণে এটি ব্যবহার করা হয়।


মাত্রা (Dose):

প্রাপ্তবয়স্কদের 250 - 500 mg দিনে 3 - 4 বার মুখে খেতে দেওয়া হয়। ইনজেকশন 500 mg - 1 gm দিনে 2 - 3 বার Intramuscular (IM) বা Intravenus (IV) পথে দেওয়া যায়।

শিশুদের জন্ম থেকে 6 মাস বয়স পর্যন্ত 62.5 mg দিনে 4 বার, 6 মাস থেকে 4 বছর পর্যন্ত 125 mg দিনে 4 বার। 4 বছর থেকে 12 বছর পর্যন্ত 250 mg দিনে 4 বার দেওয়া যায়।

ইনজেকশন ছোট শিশুদের 100 mg থেকে 125 mg দিনে 2 - 3 বার, 4 বছরের উর্দ্ধে শিশুদের 250 mg দিনে 2 - 3 বার দেওয়া যায়। শিশুদের IM পথে দেওয়াই ভালো।


পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া (Side effect):

পেনিসিলিয়ামে এলার্জি থাকলে চামড়ায় উদ্ভেদ নির্গমন, আমবাত, চুলকানি, বুক ধড়ফড় করা, খিঁচুনি প্রভৃতি হতে পারে। এছাড়া সাধারণত পাতলা পায়খানা, কোষ্টকাঠিন্য, গা বমিভাব, রক্তাল্পতা, ইউসিনোফিলিয়া, লিউকোপেনিয়া প্রভৃতি উপসর্গ দেখা দিতে পারে।


সাবধানতা (Caution):

গর্ভবতী মা ও স্তনদানকারী মায়েদের অল্প মাত্রায় দিতে হবে। পাতলা পায়খানার রোগীদের মুখে না খাইয়ে ইনজেকশন দিলে ভালো হয়। যাদের পেনিসিলিনে এলার্জি আছে তাদের এটা ব্যবহার নিষিদ্ধ।


আন্তঃবিক্রিয়া (Intereaction):

গর্ভনিরোধক পিলের সাথে খেলে এর কর্মক্ষমতা কমে যায়, মাসিক ঋতুস্রাব বেশি হয়, গর্ভসঞ্চার ঘটতে পারে অর্থাৎ গর্ভরোধের কাজ ব্যর্থ হয়।

এলপুরিনল এর সাথে খেলে চামড়ায় উদ্ভেদ বের হতে পারে। Atenolol এর সাথে খেলে তার কাজ কম হয়। এরিথ্রোমাইসিন ও টেট্রাসাইক্লিন এর সাথে খেলে কর্মক্ষমতা কম হয়।