জেন্টামাইসিনের ব্যবহার, মাত্রা এবং পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া Gentamicin - Its uses, dose & side effects

জেন্টামাইসিন (Gentamicin)


জেন্টামাইসিন (Gentamicin) জলে দ্রবণীয় সাদা রঙের পাউডার। এটি এক বিশেষ ধরনের ছত্রাক কালচার করে তৈরি করা হয়। এর সালফেট রূপ ওষুধ হিসেবে ব্যবহার হয়। এটি একটি শক্তিশালী এমাইনোগ্লাইকোসাইড এন্টিবায়োটিক। জেন্টামাইসিন অধিকাংশ গ্রাম নেগেটিভ জীবাণুদের বিরুদ্ধে দারুণভাবে সক্রিয়।



ক্রিয়াপদ্ধতি (Action method):

এটি পৌষ্টিকতন্ত্র থেকে শোষিত হয় না বলে ইনজেকশন মাধ্যমে ব্যবহার করা হয়। তবে এটি বাহ্যিক প্রয়োগের মলম বা ক্রিম এবং চোখ ও কানের ড্রপ হিসেবে পাওয়া যায়।

এটি ইনজেকশন মাধ্যমে পেশিতে দেবার 1 ঘন্টার মধ্যে রক্তরসে সর্বোচ্চ মাত্রায় পৌঁছায়। এটি রক্তরসে 8 - 12 ঘন্টা পর্যন্ত সক্রিয়(Active) থাকে। এই ওষুধের অধিকাংশই মূত্রের মাধ্যমে বাইরে নির্গত হয়। শিরাপথে(IV) দিলে এর ক্রিয়া দ্রুত হয়। এটি দেহের সমস্ত কলা কোষে সমানভাবে ছড়িয়ে পড়ে, তবে CSF (Cerebro Spinal Fluid) এ খুব কম মাত্রায় পৌঁছায়।


ব্যবহার (Uses):

মূত্রযন্ত্রের (UTI) সকল প্রকার ইনফেকশন, পোড়া ঘা, ব্রঙ্কাইটিস, নিউমোনিয়া, ফুসফুসের সকল প্রকার রোগ, কলেরা, ডায়রিয়া সহ সকল প্রকার আন্ত্রিক রোগ, রক্তদুষ্টি, ত্বকের সকল প্রকার ইনফেকশন, নাক ও কানের সকল প্রকার ইনফেকশন প্রভৃতিতে জেন্টামাইসিন ব্যবহার করা হয়।

এই ওষুধ সদ্যোজাত শিশুদের ক্ষেত্রেও ব্যবহার করা। মলম বা ক্রিম আঘাত ও ক্ষতের ড্রেসিং, সার্জারীর পর বাহ্যিক প্রয়োগ করতে, ফোঁড়া, কার্বান্কল, পিতবর্ণ পীড়া ও অন্যান্য ক্ষতে বাহ্যিক প্রয়োগ করতে ব্যবহার করা চলে।

ড্রপ ওষুধ কানে পুঁজ, চোখের যন্ত্রণা, কর্নিয়ার ক্ষত, কানের অন্যান্য ইনফেকশনে ব্যবহার করা হয়।


মাত্রা (Dose):

প্রাপ্তবয়স্কদের (Adult) 80 mg অর্থাৎ 2 ml করে দিনে 2 - 3 বার ইন্টরামাসকুলার (IM) পথে দেওয়া হয়। মারাত্মক ইনফেকশনে ইন্ট্রাভেনাস (IV) পথেও দেওয়া যায়।

শিশুদের জন্মের পর থেকে এক সপ্তাহ বয়সকালে 7.5 mg দিনে 2 বার দেওয়া হয়। 1 সপ্তাহ থেকে 6 মাস পর্যন্ত 10 mg দিনে 2 বার দেওয়া যায়। 6 মাস থেকে 4 বছর বয়স পর্যন্ত 15 - 20 mg দিনে 2 বার দেওয়া যাবে। 4 বছর থেকে 12 বছর বয়স পর্যন্ত শিশুদের 60 mg দিনে 2 বার দিতে হবে।

মলম বা ক্রিম প্রয়োজন অনুযায়ী ব্যবহার করতে হবে। চোখ বা কানের ড্রপ যথাক্রমে 1 - 2 ফোঁটা এবং 3 - 4 ফোঁটা করে দিনে 3 - 4 বার দেওয়া হয়।


পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া (Side effect):

মাথাধরা, চামড়ায় উদ্ভেদ, সন্ধির প্রদাহ (Joint pain) প্রভৃতি হতে পারে। মূত্রে কাস্ট, সেল প্রোটিন প্রভৃতি নির্গত হয়। এছাড়া ঝিমুনিভাব, মাথাঘোরা, কান ভোঁ ভোঁ করা প্রভৃতি দেখা দিতে পারে। অবসাদ, অনিদ্রা, ক্ষুধামন্দা, বমিভাব, চুল ওঠা প্রভৃতিও কখনও হতে দেখা যায়।


আন্তঃবিক্রিয়া (Intereaction):

ফ্রুসেমাইড, বুমেটাডিন, সিসপ্লাটিন, ভ্যানকমাইসিন, পেনিসিলিন, সেফালোস্পরিন, এরিথ্রোমাইসিন, হেপারিন ইত্যাদির সাথে আন্তঃবিক্রিয়া ঘটে, ফলে বিভিন্ন সাইড এফেক্ট দেখা দিতে পারে।


সাবধানতা (Caution):

গর্ভাবস্থায় এই ওষুধ ব্যবহার নিষেধ, স্তনদানকারী মায়েদের ব্যবহার না করাই ভাল। বয়স্কদের (Adult) ব্যবহারে কোন বাধা নেই। শিশুদের প্রস্রাবের রোগ থাকলে সাবধানে ব্যবহার করতে হবে। স্নায়ুতন্ত্রের (Nervous system) বিভিন্ন রোগে এটি ব্যবহার না করাই ভাল।