এমিকাসিনের ব্যবহার, মাত্রা এবং পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া Amikacin - Its uses, dose & side effects


এমিকাসিন (Amikacin)


এমিকাসিন (Amikacin)  এমাইনোগ্লাইকোসাইড গ্রূপের একটি এন্টিবায়োটিক ওষুধ। এটি ক্যানামাইসিন থেকে সেমিসিন্থেটিক ভাবে তৈরি করা হয়। এটি অনেক গ্রাম পজিটিভ এবং গ্রাম নেগেটিভ জীবাণুদের ওপর সক্রিয়। এর ক্রিয়াপদ্ধতি অন্যান্য এমাইনোগ্লাইকোসাইডের মতই।




ক্রিয়াপদ্ধতি (Action method):

এটি মুখে খেলে শোষিত হয় না বলে ইনজেকশন মাধ্যমে ব্যবহার করা হয়।
এটি ইনজেকশন মাধ্যমে পেশিতে (IM)  দেবার 1 ঘন্টার মধ্যে রক্তরসে সর্বোচ্চ মাত্রায় পৌঁছায়। শিরাপথে (IV) দেবার 1 মিনিটের মধ্যে রক্তরসে সর্বোচ্চ মাত্রায় পৌঁছায়। এটি রক্তরসে 8 - 12 ঘন্টা পর্যন্ত সক্রিয়(Active) থাকে। এই ওষুধের অধিকাংশই মূত্রের মাধ্যমে বাইরে নির্গত হয়। শিরাপথে(IV) দিলে এর ক্রিয়া দ্রুত হয়। এটি দেহের সমস্ত কলা কোষে সমানভাবে ছড়িয়ে পড়ে, এমনকি CSF (Cerebro Spinal Fluid), পেরিটনিয়াল ফ্লুইড ইত্যাদিতে ব্যাপকভাবে বিস্তার লাভ করে।


ব্যবহার (Uses):

মূত্রযন্ত্রের (UTI) সকল প্রকার ইনফেকশন, হাড় ও জয়েন্টের ইনফেকশন, পোড়া ঘা, ব্রঙ্কাইটিস, নিউমোনিয়া, ফুসফুসের সকল প্রকার রোগ, কলেরা, ডায়রিয়া সহ সকল প্রকার আন্ত্রিক রোগ, রক্তদুষ্টি, ত্বকের সকল প্রকার ইনফেকশন, মেনিনজাইটিস, পেরিটনাইটিস প্রভৃতিতে এমিকাসিন ব্যবহার করা হয়।


মাত্রা (Dose):

প্রাপ্তবয়স্কদের (Adult) 500 mg করে দিনে 2 বার পেশিতে অথবা শিরাপথে দেওয়া যায়। শিরাপথে (IV) এটি খুব ধীরে ধীরে পুশ করতে হয়। I.V ফ্লুইডের সাথেও 30 মিনিট ব্যাপী এটি পুশ করা যায়।

শিশুদের জন্ম থেকে 1 সপ্তাহ বয়স পর্যন্ত প্রথমে 100 mg ভায়ালের 1/2 ml, পরে 12 ঘন্টা অন্তর 1/3 ml করে দেওয়া যায়।

1 সপ্তাহ থেকে 6 মাস বয়স পর্যন্ত শিশুদের 1/2 ml করে দিনে 2 - 3 বার দেওয়া যায়।

6 মাস থেকে 2 বছর বয়স পর্যন্ত শিশুদের 100 mg ভায়াল 2 ml করে দিনে 2 বার দেওয়া যাবে।

2 বছর থেকে 4 বছর বয়স পর্যন্ত শিশুদের 250 mg ভায়াল এক থেকে দেড় ml করে দিনে 2 বার দিতে হবে।

4 বছর থেকে 12 বছর বয়স পর্যন্ত 250 mg ভায়াল 2 ml করে দিনে 2 বার দেওয়া যাবে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে পেশিতে (IM) পুশ করাই ভালো।


পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া (Side effects):

মাথাধরা, হালকা জ্বর, চামড়ায় উদ্ভেদ, সন্ধির প্রদাহ (Joint pain) প্রভৃতি হতে পারে। মূত্রে কাস্ট, সেল প্রোটিন প্রভৃতি নির্গত হয়। এছাড়া ঝিমুনিভাব, হাত পা কাঁপা, মাথাঘোরা, কান ভোঁ ভোঁ করা, কানে কম শোনা প্রভৃতি দেখা দিতে পারে। অবসাদ, অনিদ্রা, ক্ষুধামন্দা, বমিভাব, চুল ওঠা প্রভৃতিও কখনও হতে দেখা যায়।


সাবধানতা (Caution):

এমাইনোগ্লাইকোসাইডে এলার্জি থাকলে এটি ব্যবহার করা চলবে না। গর্ভবতী মহিলাদের জরুরি প্রয়োজনে কম মাত্রায় ব্যবহার করতে হবে। স্তনদানকারী মায়েদের ব্যবহার না করাই ভাল। এই ওষুধ অন্য কোন ওষুধের সাথে মিশিয়ে পুশ করা যাবে না।


আন্তঃবিক্রিয়া (Intereaction):

এমপিসিলিন, সালফাডায়াজিন, ফ্রুসেমাইড, বুমেটাডিন, সিসপ্লাটিন, ভ্যানকমাইসিন, পেনিসিলিন, সেফালোস্পরিন, এরিথ্রোমাইসিন, হেপারিন ইত্যাদির সাথে আন্তঃবিক্রিয়া ঘটে, ফলে বিভিন্ন সাইড এফেক্ট দেখা দিতে পারে।